মোস্তাফিজুর রহমান : নেই সরকারি সহযোগিতা নেই পৃষ্ঠপোষকতা একান্ত ব্যক্তিনির্ভর করে করোনা শিক্ষা যোদ্ধা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক রুবেল আলহাজ্ব সমসের উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (গণিত) । তিনি গত ১৬/০৮/২০১৫ ইং তারিকে আলহাজ্ব সমসের উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গণিত পদে যোগদান করেন। সে ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে হাতীবান্ধা এস,এস,উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০০৫ সালের এস,এস,সি পরীক্ষায় দুটি বিষয়ে জি,পি,এ ৫ সহ ৪.০৬ নিয়ে কৃতকার্য হয়। পরবর্তীতে হাতীবান্ধা আলীমুদ্দিন ডিগ্রি কলেজ থেকে বাংলা ও গণিত বিষয়ে জি,পি,এ ৫ সহ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৪.২০ নিয়ে ২০০৭ সালের এইচ,এস,সি পরীক্ষায় পাস করে। ২০১১ সালে দ্বিতীয় বিভাগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হাতীবান্ধা আলীমুদ্দিন ডিগ্রি কলেজ থেকে বি,এস,সি পাশ করেন। তারপর ২০১৪ সালের অনুষ্ঠিত ৯ম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মাধ্যমিক পর্যায়ের গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে নিবন্ধন পাস করে একজন শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন।
পরবর্তীতে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার পর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় অধীনে দ্বিতীয় বিভাগে বি,এড পাস করে এখন পর্যন্ত উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় অধীনে এম,এড দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়ন করছেন। পারিবারিক জীবনে বাবা মা তিন ভাই,স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে তার পারিবারিক জীবন । ব্যাক্তিগত জীবনে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এছাড়াও লালমনিরহাট জেলা চেম্বার অফ কমার্সের সদস্য, মানবাধিকার কমিশনের সদস্য এবং সে স্টুডেন্ট অ্যাকশন প্রোগ্রামে সমশের উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছে। শিক্ষকতা কালীন সময়ে আমি রংপুর টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে ১৪ দিনের আইসিটি প্রশিক্ষণ, লালমনিরহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৬ দিনের সৃজনশীল প্রশ্ন পত্র প্রণয়ন, পরিশোধন ও উত্তর পত্র মূল্যায়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ, ৩ দিনের জীবন দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ এবং ৬ দিনের গণিত বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণ , রংপুর মুলাটোল কামিল মাদ্রাসা থেকে ৬ দিনের বিজ্ঞান বিষয়ক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। তিনি শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন কালে বিভিন্ন সময়ে একক প্রচেষ্টায় কখনও অন্য সহকর্মী শিক্ষকদের সাথে দিনে কখনও রাতে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার খোজ খবর নেন । শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সাথে ব্যাক্তিগত উদ্যোগে ফোনে কিংবা সরাসরি পড়াশোনার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে খোজ খবর নেন।করোনাকালীন সময়ে বসে না থেকে মুক্তপাঠ থেকে ৩৫ টি কোর্স করেন তিনি মাইক্রোসট এডুকেশন সেন্টার থেকে ২৫ টি কোর্স করে, শিক্ষক বাতায়নে নিয়মিত কন্টেন্ট আপলোড । শিক্ষক বাতায়নে জেলা আইসিটি৪ ই এম্বাসেডর নির্বাচিত হয়। করোনাকালীন সময়ে বাংলাদেশ সরকার সংসদ টেলিভিশনে আমার ঘর আমার স্কুলের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে তারই ধারাবাহিকতায় করোনাভাইরাস মহামারীকালে গত এপ্রিল মাসের ৯ তারিখ থেকে রংপুর অনলাইন স্কুল কার্যক্রম শুরু হয়। রংপুর অনলাইন স্কুল থেকে গণিত ও উচ্চতর গণিত বিষয়ে নিয়মিত ভাবে ক্লাস নিয়ে আসছি। রংপুর অনলাইন স্কুল থেকে ক্লাস নিয়ে রংপুর অনলাইন স্কুল থেকে ৭ বার প্রথম, ৫ বার দ্বিতীয় এবং ৬ বার তৃতীয় স্থান লাভ করে। পরবর্তীতে লালমনিরহাট,কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়,নীলফামারী,চট্টগ্রাম জেলার ২৫ টি অনলাইন স্কুল থেকে ক্লাস নিয়ে শিক্ষক বাতায়নে আপলোড করে শিক্ষক বাতায়নে সারা বাংলাদেশের শিক্ষকদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান লাভ করে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৯৫০ টির বেশি অনলাইন ক্লাস নিয়েছেন।
তিনি জানান, লালমনিরহাট জেলা বেসরকারী স্কুল সমিতির সভাপতি খুরশিদুজ্জামান আহমেদ ও প্রধান শিক্ষক করিম উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় অনুপ্রেরনায় এবং জোত্যিষ রায় সহকারী শিক্ষক তালুক শাখাতী উচ্চ বিদ্যালয় সবসময় আমাকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করায় আমার প্রবল ইচ্ছাশক্তি আমার মনের ভালো কিছু করার ইচ্ছে শক্তি থেকে এসব করছি।
এ বিষয়ে তার প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ বলেন, সে স্কুলেরপ্রান তার উপস্থিতি, পাঠদান আমাকে বিমোহিত করে। সে নিষ্ঠাবান শিক্ষক। করোনাকালে নিজ প্রতিষ্ঠান সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিচালিত অনলাইন স্কুল পরিচালিত ক্লাসে অংশগ্রহন করে বাড়িতে বসে থাকা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানে সকলের অনুকরণ হয়ে থাকবে।
হাতীবান্ধা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কন্দর্প নারায়ণ জানান, আমি দেখেছি এবং শুনেছি একজন শিক্ষক ব্যাক্তি উদ্যোগে ছাত্রছাত্রীদের জন্য অসাধ্য সাধন করছে আমি তাকে স্বাগত জানাই।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষাকর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, কোন সরকারি বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের সাহায্য সহযোগিতা ছাড়াই অনলাইন স্কুলে পাঠদানের মাধ্যমে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের এই আপদকালীন সময়ে প্রশংসার দাবিদার।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা শিক্ষা উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন জনান, তাকে আমি চিনি ও জানি। আমার জানা মতে সে নিজের অর্থ, মেধা ও শ্রম দিয়ে করোনায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে ব্যাক্তিগত উদ্যগে অনলাইন স্কুল ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা পরিষদ থেকে তার মহৎ উদ্যোগ কে কিভাবে আরো ছড়িয়ে দেওয়া যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।
অনেক ছাত্র-ছাত্রী জানায়, আমরা রুবেল স্যারের অনলাইনে ক্লাস দেখি ও পড়ি তার বোঝানোর কৌশলটা খুবই সহজ সরল আমরা বাড়িতে বসে তার দ্বারা উপকৃত হয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি।
সহকারী শিক্ষক রুবেল হোসেন বলেন, ছাত্রছাত্রীরা আমার প্রান আজ তারা স্কুলে নেই মনের তাগিদে কর্তব্য ও দায়িত্ববোধ থেকে এই ক্ষুদ্র প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি এবং যাবো। কিছু পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পরিধি বাড়িয়ে দিব । সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা কামনা করি সুস্থ থেকে ছাত্রছাত্রীদের জন্য কিছু করে যেতে পারি।