ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান ও ডাকসুর সদ্য সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে একই সংগঠনের নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।এতে ২২ জনকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে তারা এই ঘোষণা দেন।‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ নামেই তারা নতুন এ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে নতুন কমিটির আহ্বায়ক এ পি এম সুহেল বলেন, ‘মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থেকে সরে গিয়ে মানুষের আবেগ ও বিশ্বাস নিয়ে নোংরা রাজনীতি, আর্থিক অস্বচ্ছতা, ত্যাগী ও দুঃসময়ের সহযোদ্ধাদের মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে অবমূল্যায়ন করা এবং সম্প্রতি ঢাবি শিক্ষার্থী ধর্ষণের মামলাকে কেন্দ্র করে নোংরা রাজনীতিকিকরণের অপচেষ্টার প্রতিবাদে ও সাংগঠনিক সংস্কারের উদ্দেশ্যে আজকের সংবাদ সম্মেলন।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ তারিখে সংগঠনের তৃতীয় বর্ষে পদার্পণের অনুষ্ঠানে সংগঠনের নাম সংক্ষিপ্ত করা হয়, যার বিরোধিতা করেছিলাম আমরা অনেকেই। ডাকসু’র মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাড়াহুড়ো করে রাজনীতি করার অভিপ্রায়ে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ, শ্রমিক অধিকার পরিষদ ও প্রবাসী অধিকার পরিষদ নামে তিনটি অঙ্গ সংগঠন তৈরি করা হয় ছাত্র অধিকার পরিষদ এর উদ্যোগে। যেখানে এসব সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এখন পর্যন্ত অজানা আমাদের কাছে। এর ফলে সংগঠনের অভ্যন্তরে চাপা ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয় ও এর বিরোধিতা করেন সংগঠনের তৃণমূল থেকে শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ। কিন্তু একক সিদ্ধান্তে রাজনীতি করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। যা একপ্রকার স্বৈরতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত এবং সেই সঙ্গে চরম বিরোধ সৃষ্টি করে সংগঠনের অভ্যন্তরে। বিভিন্ন কারণে তরুণদের রাজনীতি বিমুখতায় তারুণ্যনির্ভর এ দলের আত্মপ্রকাশ সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু গণমানুষের কথা বলে সাধারণ মানুষের আবেগকে পুঁজি করে, মুখের আড়ালে মুখোশ পরে আছে ভয়ঙ্কর কিছু সত্য, যা সংগঠনের প্রায় সবাই জানে, কিন্তু প্রকাশ করতে চায় না।’
বর্তমান কমিটির সদস্য সচিব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ইসমাইল সম্রাট বলেন, ‘এর ভয়াবহতা এতটাই প্রকট হয়েছে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণের মামলাকে রাজনীতিকীকরণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিকটিমকে নোংরাভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, যেখানে সংগঠনের ৮০ ভাগ সহযোদ্ধা এই বিষয়ে জানে এবং সমাধানের প্রক্রিয়ায় অনেকেই অংশগ্রহণ করে। এই মামলাটা তখনই রাজনৈতিক মামলা হতো যদি সংগঠনের সবাই এটা অনেক আগে খেকে না জানতো।’
তিনি বলেন, ‘এপিএম সুহেলকে বহিস্কার ঢাবি সিন্ডিকেটের একক সিদ্ধান্ত ছিল। কেন্দ্রীয় কোনও সিদ্ধান্ত ছিল না। ঢাবি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে তখনই সবাই মিলে একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিল।এদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললেই তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ফোন কল, ম্যাসেজের মাধ্যমে নানাবিধ হুমকি ধামকি দেওয়া হয়। যা ইতোমধ্যে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গেও করা হয়েছে। এটা অনেকটা সরকারের বিরোধী মতকে দমিয়ে রাখার যে প্রবণতা তারই অন্য রূপ।’